গৃহ ব্যবস্থাপনার কর্মক্ষেত্র শুধু গৃহাঙ্গনেই সীমাবদ্ধ নয়। গৃহের বাইরের সমাজে ও পরিবেশে এবং কর্মক্ষেত্রে বিস্তৃত। সমাজ প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। পরিবর্তনশীল সমাজের প্রভাব গৃহ ও পরিবারের উপর পড়ে ৷ সে অনুযায়ী ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে পরিবর্তন আনা অথবা পরিবর্তনশীল সমাজের সাথে খাপ খাওয়ানোর শিক্ষা গৃহ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নিহিত রয়েছে।
আমাদের চাহিদার তুলনায় সম্পদ সীমিত। এ অবস্থায় চাহিদাগুলো পূরণ করতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ও সম্পদের ব্যবহারে দক্ষতা বাড়ানো একান্ত অপরিহার্য। দক্ষতা বাড়াতে হলে সম্পদের প্রকৃতি ও তার বিকল্প ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞান থাকা একান্ত দরকার। এ রকম পরিস্থিতিতে গৃহ ব্যবস্থাপনার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান যুগে পরিবার একটি অর্থনৈতিক একক হিসেবে বিবেচিত। বেশির ভাগ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেমন— পরিবারের আয়, ব্যয়, সঞ্চয়, বিনিয়োগ ইত্যাদির মূল উৎস হচ্ছে পরিবার। পরিবারের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এ পরিস্থিতিতে ভোক্তা এবং ক্রেতা হিসেবে ব্যক্তি তথা পরিবারের কী অধিকার এবং অধিকার রক্ষায় কী করণীয় সে সম্পর্কে সচেতন থাকা একান্ত প্রয়োজন। গৃহ ব্যবস্থাপনার জ্ঞান এ ব্যাপারে দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে।
গৃহ ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য হলো কর্মমুখী আচরণ দ্বারা পরিবার তথা দেশের কল্যাণ সাধন করা। মানুষ তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োগ করে সফলতা অর্জন করতে পারে। এই সফলতাই পারিবারিক জীবনে কল্যাণ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনতে পারে।
গৃহ ব্যবস্থাপনার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যগুলো হলো—
আধুনিক জীবনযাত্রার সাথে তাল মিলিয়ে গৃহস্থালির আধুনিক সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্রের সাথে পরিচিত হয়ে এগুলোর যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণে পারদর্শিতা অর্জন করা। দূষণমুক্ত, বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ে তোলা। বর্তমান ও ভবিষ্যতে জ্বালানি সংকটের ক্ষেত্রে সচেতন হয়ে তা দূরীকরণে সক্রিয় অংশগ্রহণ করা।
গৃহ ব্যবস্থাপনা শিক্ষা শিক্ষার্থীদের বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য পরিবারের সার্বিক কল্যাণ ও উন্নয়ন বিধানের যাবতীয় গুণাবলি অর্জন করতে সহায়তা করে। গৃহ ও কর্মক্ষেত্রে বাস্তব পরিস্থিতি ও সমস্যা অনুধাবন করে, কীভাবে এর সাথে অভিযোজন করা বা খাপ খাওয়ানো যায় গৃহ ব্যবস্থাপনার জ্ঞান সে বিষয়ে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
আরও দেখুন...